
ছবি: সুস্থ স্বাভাবিক এক পরিবার (প্রতীকী ছবি)
শরীর অসুস্থ হওয়ার কারণ অনিয়মিত আহার। শরীর গঠনের জন্য যে খাদ্য প্রয়োজন, তা না গ্রহণ করা, অতিরিক্ত পরিশ্রম, রাত্রি জাগরণ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চলার কারণে মানুষের দেহে বিভিন্ন জীবাণু প্রবেশ করে রোগের সৃষ্টি করে, যার ফলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে।
শরীর সুস্থ রাখতে হলে কী করবেন?
১. প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় কিছুটা সময় খোলামেলা জায়গায় বেড়াবেন। মুক্ত বায়ূ সেবণ শরীরের পক্ষে বিশেষ উপকারী।
২. প্রতিদিন আট ঘণ্টার বেশি ঘুমাবেন না আর দিনে ঘুমোবেন না। সূর্যোদয়ের আগে শয্যা ত্যাগ করবেন আর রাত দশটার ভিতর শোবার চেষ্টা করবেন।
৩. আপনার বাসগৃহের চারপাশ খোলামেলা রাখবেন। বাড়ির চারপাশে কোনোরকম আবর্জনা জমতে দেবেন না। যে ঘরে বাস করেন, সেই ঘরে যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্যের আলো প্রবেশ করে কারণ আলো বাতাসহীন ঘর খুবই অস্বাস্থ্যকর। আপনি যে জিনিস ব্যবহার করবেন তা জামা কাপড়ই হোক, বিছানা আসবাবপত্রই হোক; সব সময় পরিষ্কার রাখবেন।
৪. দুপুরে বা রাত্রে খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শুয়ে পড়বেন না। দুপুরে খাওয়ার পর অন্তত আধঘন্টা সামান্য পায়চারি করবেন বা চেয়ারে বসে বিশ্রাম নেবেন। রাত্রেও খাওয়ার পর সামান্য পায়চারি করবেন তারপর শুতে যাবেন। চেষ্টা করবেন ন’টার মধ্যে খেয়ে দশটার ভেতর শুয়ে পড়তে।
৫. শীত গ্রীষ্ম বর্ষা সবসময় স্নান করবেন।
৬. শ্রম বিনা কোনদিন সুখ হয় না কিন্তু অর্থের মোহে সেই শ্রম যেন আট ঘণ্টার বেশি না হয়, সেদিকে নজর দেবেন। সময়ের জন্য চাই সুষম খাদ্য ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম। মুক্ত স্থানে, ভ্রমণ সাঁতার কাটা, সামান্য দৌড়াদৌড়ি করলে শরীর সুস্থ থাকে। তবে দৌড়ঝাপ বা ব্যায়াম যৌবনে করা যায় প্রৌঢ়ত্বের সীমা পার হওয়ার পর নয়। তখন তাদের সকাল সন্ধ্যায় মুক্ত বায়ুতে ভ্রমণই শ্রেষ্ঠ ব্যায়াম।
৭. মদ্যপান, ধূমপান, জর্দা দিয়ে পান খাওয়া অতিরিক্ত হলে তা স্বাস্থ্যের ক্ষতিকর কারণ হয়। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ও রাত্রি জাগরণও স্বাস্থ্যহীনতা ঘটায়।
৮. সকালে উঠেই পায়খানায় যাবেন। যাদের সকালে উঠে পায়খানায় যাওয়া অভ্যাস এবং যাদের সকালে পায়খানা পরিষ্কার হয় তাদের রোগ কম হয়। কথায় আছে একেবারে যোগী অর্থাৎ যোগ্য, দুবারে ভোগী অর্থাৎ যারা ভোজন রসিক, যারা তিনবারের, তারা রোগী। একবারে পায়খানা হওয়া ভালো। না হলে সকাল সন্ধ্যায় দুবার কিন্তু তিনবার হলেই বুঝতে হবে পেট খারাপ হয়েছে।
৯. যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, তারা যেন সেই খাবার খান, যেসব খাবার খেলে পায়খানা নরম হয়। তাদের একটু বেশি করে শাকসবজি ফলমূল বিশেষকরে বেল খাওয়া উচিত, তাহলে পায়খানা পরিষ্কার হয়।
১০. জল থেকেই পেটের রোগ বেশি হয় তাই সব সময় পরিশুদ্ধ জল খাবেন জল ফুটিয়ে তা ঠান্ডা করে খাওয়াই ভালো।
১১. অনেকের অনেক কারণে মন খারাপ হয়, কখনো দুশ্চিন্তায়, কখনো অন্যের আপত্তিকর কথায়? কিন্তু মন খারাপ করে বসে থাকবেন না। গান-বাজনা খেলাধুলো বন্ধুদের সঙ্গে বিভিন্ন আলোচনা করে সময় কাটালে মনের দুশ্চিন্তা কেটে যাবে।
১২. যৌবনে যেমন খাদ্যের পরিমাণ বাড়াতে হয়, বৃদ্ধ বয়সে কমাতে হয়। বুড়ো বয়সে যারা আমিষ ভজন করে, অতিরিক্ত ভোজন করে, তাদের উচ্চ রক্তচাপ ও বহুমূত্র রোগ হয়। তাই বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে খাওয়ার পরিমাণ কমানো এবং নিরামিষ খাবার খাওয়া ভালো। তাতে শরীর সুস্থ থাকে।
১৩. সপ্তাহে না হোক ১৫ দিন অন্তর একদিন উপোষ থাকা স্বাস্থ্যের পক্ষে খুব ভালো। বাতের রোগীরা যদিও অমাবস্যা ও পূর্ণিমা তিথিতে উপবাস করে থাকেন, তাতে করে বাতের ব্যথার উপশম হয়।
১৪. প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময় আহার করবেন এবং পারলে সপ্তাহে একদিন নিরামিষ খাবেন মাসে দুদিন দুপুরে খাবেন না।
এই জিনিসগুলি মেনে চলুন আর দীর্ঘদিন সুস্থ সতেজ, রোগমুক্ত জীবন-যাপন করুন। নিজে সুস্থ থাকুন, পরিবারকে সুস্থ রাখুন।
2 thoughts on “Healthy Tips: এই যান্ত্রিক যুগে কীভাবে নিজেকে সুস্থ, সতেজ রাখবেন, জেনে নিন।”